আমাদের ভারতবর্ষের শিল্প জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের জীবনের অবসান ঘটলো। টাটা কোম্পানির চেয়ারম্যান রতন টাটা গত বুধবার মুম্বাইয়ের ব্রিচ কান্ডি হাসপাতালে তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তিনি ইহলোক ছেড়ে পরলোকে গমন করলেন বুধবার। তার মৃত্যুর বার্তা শুনে সমস্ত দেশবাসী শোকাহত। ৮৬ বছর বয়সে তিনি পরলোক গমন করেছেন।
তাকে আমরা কেবলমাত্র শিল্পপতি হিসেবেই চিনতাম না তাকে আমরা উদ্যোগপতি হিসেবেও জানি। তিনি যে কত ভালো মানুষ তার মন যে কতটা উদার সে কথা আমাদের কারোর অজানা নয়। হাজার হাজার কোটি টাকার টাটা সাম্রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও তার নাম কখনো ধনী ব্যক্তিদের লিস্টে থাকেনি কারণ তিনি তার ব্যবসার অনেকটা টাকাই মানুষের সেবামূলক কাজে ব্যয় করতেন।
আরতার হাত ধরেই ভারতবর্ষ বিদেশেও পরিচিতি শিল্প থেকে অটোমোবাইলের ক্ষেত্রে। টাটা গ্রুপের উপরে যেই ব্যক্তি বটের ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি হলেন রতন টাটা তার হাত ধরেই টাটা গ্রুপ এতটা উন্নত স্থানে পৌঁছেছে। এই টাটা কোম্পানির অধীনে অনেক ব্যবসা রয়েছে।
১৯৯১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন রতন টাটা। তারপর তিনি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে আসেন কিন্তু টাকা ইন্ডাস্ট্রি সদস্য হিসাবে তিনি টাটা গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আজ আমাদের দেশে ১০টি ক্ষেত্রের মধ্যে ৩০ টি সংস্থা রয়েছে টাটা গ্রুপের। ব্যবসায়িক জগতে রতন টাটার প্রবেশ হয়েছিল টাটা স্টিলের মাধ্যমে। ১৯৬২ সালে বিদেশ থেকে তিনি পড়াশোনা শেষ করে ভারতবর্ষে এসে টেলকো সংস্থার একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজে যুক্ত হন তারপর সেখান থেকেই তিনি কাজ শেখেন বিভিন্ন কায়দা কৌশল শেখেন।
রতন টাটা চেয়ারম্যান হবার পর এই গ্রুপকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে টাটার টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি টাটা টেলিসার্ভিসেস তৈরী করেন। তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও তিনি কাজ করেছেন সেখানেও তার অবদান রয়েছে।১৯৬৮ সালে তৈরি টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস কে ২০০৪ সালে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করা হয়।
অনেকেই জানেন না টাটা স্টিল নয় টাটা কোম্পানির পথ চলা শুরু হয়েছিল ট্রেডিং ফার্ম হিসাবে। এর পর তৈরি হয় টাটা স্টিল। তারপর একা একা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তৈরি হয়টিসিএস, টাটা এলোক্সি। অটোমেবাইল ক্ষেত্রে রয়েছে টাটা মোটরস, জ্যাগুয়ার, ল্যান্ড রোভার।
এফএমসিজি পণ্যের বাজারেও একটা বিরাট অংশ রয়েছে টাটা গ্রুপের । নুন থেকে শুরু করে চা কফি বিভিন্ন মশলাটাটা গ্লুকো, স্টারবাকস রয়েছেএই টাটা গ্রুপের অধীনে।
এছাড়া টাটা পাওয়ার রয়েছে শক্তি উৎপাদন করার ক্ষেত্রে । টাটার হোটেলের অধীনে রয়েছে তাজ ,ভিভান্তা। তেমনি বিমান পরিষেবাতেও রয়েছে ইন্ডিয়া, ভিস্তারা ।
এছাড়াও ফিন্যান্স এর দিক থেকে রয়েছে টাটা মিউচুয়াল ফান্ড,টাটা এআইএ, টাটা এআইজি,লাইফস্টাইল সেক্টরে টাইটান, তানিস্ক, ফাস্টট্রাক, ওয়েস্টসাইডের মতো ব্রান্ড ও রয়েছে টাটার অধীনে।